পোস্টগুলি

অক্টোবর, ২০১৯ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

ধুতরা

ছবি
ফুলের নাম- ধুতরা, ডেভিল’স ট্রাম্পিট  বৈজ্ঞানিক নাম- Datura metel  পরিবার- Solanaceae  উষ্ণমন্ডলীয় দেশগুলোর বুনো গাছ। একসময় বাংলাদেশেও অনেক দেখা যেত। এখন কম দেখা গেলেও টিকে আছে। নরম ডালপালাবিশিষ্ট গাছ, প্রায় ৩ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। পাতা বড়, ডিম্বাকার, কালচে। পাতার কক্ষে একেকটি ফুল, ১২-১৫ সেমি লম্বা, বাইরে বেগুনি ভিতরে সাদা, কিংবা সম্পূর্ণ সাদা ফুল, সিঙ্গেল বা ডাবল, সুগন্ধি।  ফল গোল, কাটাভরা, বিদারী। অসংখ্য বাদামি বীজ থাকে ফলের ভিতর এবং বীজ থেকেই নতুন চারা গজায়। সমস্ত অংশই বিষাক্ত। এতে আছে বিপজ্জনক মাত্রার tropane alkaloids নামক বিষ। এই গাছের বিষক্রিয়ায় মানুষ বা পশুপাখির মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এ কারণে অনেক দেশেই ধুতুরার উৎপাদন, বিপনন ও বহন আইনত নিষিদ্ধ। আবার চৈনিক ভেষজ চিকিৎসা শাস্ত্রে বর্ণিত পঞ্চাশটি প্রধান উদ্ভিদের একটি এই ধুতুরা।  তথ্যসূত্র- ফুলগুলি যেন কথা~দ্বিজেন শর্মা   ছবি- নেট

পিয়াল

ছবি
রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, “নব শ্যামল শোভন রথে  এসো বকুল বিছানো পথে,  এসো বাজায়ে ব্যাকুল বেণু  মেখে পিয়াল ফুলের রেণু।“ অথবা  “ওই মালতীলতা দোলে  পিয়ালতরুর কোলে পুব-হাওয়াতে।“  গান-কবিতায় অথবা লোকমুখে পিয়ালের নাম শুনে নি, এমন প্রকৃতিপ্রেমী খুঁজে পাওয়া কষ্টসাধ্য ব্যাপার। পিয়াল ফুলকে নিয়ে আজকের পোস্ট।  বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমারের প্রজাতি। বিশ্বজুড়ে Buchanania গণের প্রায় বিশ/কুড়িটি প্রজাতি রয়েছে। তার মধ্যে ৬ টি প্রজাতি এই উপমহাদেশে পাওয়া যায়।  ফুলের নাম- পিয়াল  বৈজ্ঞানিক নাম- Buchanania lanzan(Synonyms: Buchanania latifolia, Chironjia sapida)  পরিবার- Anacardiaceae (Cashew family)  অন্যান্য নাম- চিরঞ্জী, চিঁবৌজী, ইংরেজিতে Chironji Tree, almondette, calumpong nut, Cheronjee, Cuddapah almond, Hamilton mombin প্রভৃতি।  পিয়াল গাছ ৪০-৫০ ফুট পর্যন্ত উচু হয়। পাতা বেশ বড়, লম্বাটে-গোলাকার, ৮/১০ ইঞ্চি লম্বা হয়। ডাল থেকে অসম সজ্জায় পাতা বের হয়। পাতায় ছোট বোঁটা আছে। শাখার আগায় বসন্তে ফুল হয়। ছোট ছোট ফুল। মার্চ মাসে ...

বকফুল

ছবি
ফুলের নাম- বকফুল  বৈজ্ঞানিক নাম- Sesbania grandiflora  পরিবার- Fabaceae  অন্যান্য নাম- Agati, Butterfly Tree, Corkwood tree, Gallito, Cresta de Gallo, Báculo, Hummingbird Tree  আমাদের প্রকৃতিতে বকফুল অনেক পুরনো। প্রচলিত আরেকটি নাম বাসনা। প্রাচীন সাহিত্যেও তার উল্লেখ আছে। রাজনিঘন্টু ও ভারতচন্দ্রের কবিতায় বকফুলের প্রসঙ্গ পাওয়া যায়। ভারতচন্দ্র লিখেছেন— ‘অশোক কিংশুক মধুটগর/ চম্পক পুন্নাগ নাগকেশর/ গন্ধরাজ যুতি ঝাটি মনোহর/ বাসক বক শেফালিকা।’  ক্ষুদ্র আকৃতির পত্রমোচী গাছ। কাণ্ড সরল, উন্নত, ম্লান-বাদামি ও মসৃণ। যৌগিক পত্রটি পালকের মতো এবং আকর্ষণীয়, পত্রিকা আয়তাকৃতি, সজোড় ও গাঢ়-সবুজ। কাক্ষিক মঞ্জরি অনিয়ত এবং স্বল্প-পৌষ্পিক। কোমল কলিগুলো বাঁকানো। দেখতে অনেকটা পাখির ঠোঁটের মতোই, বৃতিযুক্ত, দ্বিধাবিভক্ত ও সবুজ। পুষ্পস্তবকে পরাগকেশর সংখ্যা দশ, দুই গুচ্ছে বিভক্ত। প্রায় সারা বছরই ফুল ফোটে। তিনটি রঙের ফুল- সাদা, রক্তলাল ও ঈষত্ গোলাপি।  প্রথমোক্তটি সহজেই পাওয়া যাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের বাগানে, দ্বিতীয়টি রমনা পার্ক ও শেষেরটি মির্জাপ...

ফুলে রঙ করা

ছবি
ফুলে রং করার প্রচলন নতুন কোনো বিষয় না, সহস্রাব্দ আগে থেকে এখন পর্যন্ত চলছে। ধারণা করা হয়, ফুলে বিচিত্রতা এবং ব্যবসায়ে নতুনত্ব সংযোজনের লক্ষ্যে এই পদ্ধতির উদ্ভব।  প্রচলিত কিছু পদ্ধতি হচ্ছে- * স্প্রেয়িং(Spraying)- এক্ষেত্রে ফ্লোরাল স্প্রে ব্যবহার করে সাদা ফুলকে পছন্দমতো রং করা হয়।  • ডিপ ডাই(Deep dye)- ফুলকে রং মেশানো পানিতে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রেখে পানি দিয়ে হালকা ধুয়ে শুকিয়ে নেয়া হয়।  • টাই-ডাই(Tie-dye)/অ্যাবসরপশন ডাই(Absorption dye)- ফুলের ডাল কেটে রং মিশ্রিত পানিতে ১২/২৪ ঘন্টা রেখে দিতে হয়। ফুল রং মিশ্রিত পানি শোষণ করে। ফলে, পাপড়িতে বর্ণবৈচিত্র্য ঘটে।  টাই-ডাই(Tie-dye)/অ্যাবসরপশন ডাই(Absorption dye) এর মাধ্যমে ফুলকে রং করার পদ্ধতি বেশি জনপ্রিয়। এ সম্পর্কেই লিখছি- টাই-ডাই(Tie-dye)/অ্যাবসরপশন ডাই(Absorption dye) হচ্ছে মূলতঃ ফুলের ডাল কেটে রং মিশ্রিত পানিতে ১২/২৪ ঘন্টা রেখে দেয়ার মাধ্যমে ফুলে রঙ করার পদ্ধতি। এতে করে ফুল রং মিশ্রিত পানি শোষণ করে এবং পাপড়িতে বর্ণবৈচিত্র্য ঘটে।  ফুলে রঙ করতে যা যা লাগবেঃ  ১. টাটকা সাদা ফুল,  ২. ফুড কালার...

কারনেশন

ছবি
ফুলের নাম- কারনেশন  বৈজ্ঞানিক নাম- Dianthus caryophyllus  পরিবার- Caryophyllaceae  স্পেন, মোনাকো, শ্লোভেনিয়ার জাতীয় ফুল কারনেশন। কারনেশনের আদি নিবাস সম্পর্কে জানা যায় নি। ধারণা করা হয়, ২০০০ বছর যাবৎ বানিজ্যিকভাবে এর চাষ করা হচ্ছে। উন্নত কাট-ফ্লাওয়ার উৎপাদনের লক্ষ্যে সাধারণত গ্রিনহাউস বা পলিশেডে কারনেশন চাষ করার জন্য উৎসাহ দেয়া হয়। উজ্জ্বল সূর্যালোক গাছের বৃদ্ধি ও অতিরিক্ত ফুল উৎপাদনে সাহায্য করে।  টবে রোপণ পদ্ধতি : ৮-১০ ইঞ্চি আকারের টবে সারা বছর কারনেশন ফুল উৎপাদন করা যায়। টবের নিচে ইটভাঙা ২ ইঞ্চি পুরু করে দিয়ে গোবর ও রাসায়নিক সার মিশ্রিত মাটি ভর্তি করে পানি দিয়ে রেখে দিতে হবে। ৭ দিন পর টিস্যু কালচারের হার্ডেনিং করা চারা লাগাতে হবে। গাছ ৬-৭ ইঞ্চি লম্বা হলে গাছের আগা কেটে দিলে অনেক শাখা বের হবে। পরে গাছগুলো বড় হতে থাকলে একসঙ্গে খুঁটি দিয়ে বেঁধে সোজা করে রাখতে হবে এবং নিয়মিত পানি দিতে হবে।  পানি সেচ : নিয়মিত পানি সেচ দিতে হবে। গাছ অতিরিক্ত পানি সহ্য করতে পারে না। মাঝে-মধ্যে মাটি শুকনো এবং মালচিং করে দিতে হবে।  রোগবালাই : মাটিবাহিত র...

পালান

ছবি
ফুলের নাম- পালান  বৈজ্ঞানিক নাম- Wrightia coccinea  ইংরেজি নাম- Scarlet Wrightia  পরিবার Apocynaceae  পালান এক প্রজাতির সপুষ্পক উদ্ভিদ। বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে এর নাম পালাম। এটি বাংলাদেশ ও ভারতের স্থানীয় গাছ। দেশ দু'টির পাহাড়ি এলাকায় এরা জন্মায়। গাছ উচ্চতায় ২০ মিটার পর্যন্ত হয়। পাতা ডিম্বাকৃতির ও উজ্জ্বল সবুজ। পালান গাছের ফুল সিঁদুরলাল রঙের ও প্রায়-ফানেল আকৃতির। ফুলের পাপড়ি ছোট, সংখ্যায় পাঁচ ও আকারে গোল। ফুলে সুবাস রয়েছে এবং ফুলের ওপর মাছি সারাক্ষণ উড়ে বেড়ায়। ডালের ডগায় চার থেকে পাঁচটি ফুল একত্রে ফোটে। বসন্তের শেষ ও গ্রীষ্মের শুরুতে ফুল ফুটতে শুরু করে। মে মাসের পর আর ফুল থাকে না। বীজের দৈর্ঘ্য ২ সেমি।  ছবি- রিতেশ চৌধুরী

বৈচি

ছবি
ফুলের নামঃ বৈঁচি  বৈজ্ঞানিক নামঃ Flacourtia indica  পরিবারঃ Salicaceae  অন্যান্য নামঃ কাঁটাবহরী, বুঁজ, ডুংখইর, গাছটি নানা দেশে নানা নামে পরিচিত। মালয় ভাষায় কেরকুপ কেচিল, থাই ভাষায় তা-খোপ-পা এবং লাও ভাষায় গেন , এবং তাগালোগ ভাষায় বিতঙ্গল, বলং ও পাতুলান নামে পরিচিত। আফ্রিকার কয়েক জায়গায় একে কোকোউই এবং শ্রীলংকায় উগুরেসসা নামে ডাকা হয়। ফ্রেঞ্চ ভাষায় এর নাম প্রুনিয়ের দ্য মাদাগাস্কার এবং গ্রসে প্রুন দ্য কাফে। এর জার্মান নাম এচে ফ্লাকুর্তিয়ে, স্প্যানিশ নাম সিরুয়েলা গভের্নাদোরা এবং বার্মিজ নাম না-ইউ-ওয়ানি।  সেই বৈঁচির মালা... শরৎবাবুকে ছোট্টবেলায় রাজলক্ষী বানিয়ে এনে দিত। বাংলাদেশে বিলুপ্তপ্রায় বৈঁচি ফুল ও এর গাছ । বৈঁচি ফুল ক্ষুদ্র আকারের, হালকা পীত রঙের। সাধারণত শীতের শেষে ফাল্গুন-চৈত্র মাসে বঁইচিগাছে ফুল ধরে। পাঁচ পাপড়িযুক্ত ক্ষুদ্রাকৃতির ফুল। পুরুষ ও স্ত্রী ফুল আলাদা গাছে ফোটে। জ্যৈষ্ঠ মাস (এপ্রিল-জুন) থেকে ফল পাকতে শুরু করে। কাঁচা ফল গোলাকার সবুজ। পাকলে গাঢ় বেগুনি রং ধারণ করে। এর স্ব্বাদ টক-মিষ্টি। বাংলাদেশের গ্রামের শিশুরা পাকা ফলের মালা...

বাসক

ছবি
“আলোকলতার পাশে গন্ধ ঢালে  দ্রোণ ফুল বাসকের গায়;  তবুও সেখানে আমি নিয়ে যাবো  একদিন পাটকিলে ঘোড়া,  যার রুপ জন্মে-জন্মে কাঁদায়েছে  আমি তারে খুঁজিব সেথায়।“  ~জীবনানন্দ দাশ  ফুলের নাম- বাসক  বৈজ্ঞানিক নাম- Justicia adhatoda  পরিবার- Acanthaceae  অন্যান্য নাম- আড়ুসা, বাসা, বাকস রুজা, আদুলসা, সংস্কৃতে বৃষ, ইংরেজিতে Malabar Nut, Adhatoda প্রভৃতি।  বাড়ির বেড়ার ধারে, উঠোনের কোণায় বা ঝোপঝাড়ে যে ভেষজটি সহজে জন্মে তার নাম বাসক। বাসক গাছ প্রায় ৫-৬ ফুট উঁচু হয়। ভালো ও উর্বর পরিবেশ পেলে আরো বড় হয়। গ্রীষ্মকালে সাদা ফুল হয়। ফুলগুলো কিন্তু খুব সুন্দর। বাসক গাছ বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চলেই পাওয়া যায়।  বাসক পাতার চাহিদা প্রচুর। রাস্তার পাশে বা পরিত্যাক্ত জমিতে বাসক চাষ লাভজনক ব্যবসা। বাসকের মূল, ছাল, পাতা অত্যন্ত উপকারী। কিন্তু বাসক পাতা ভারী তেতো। এমনকি মিছরি যোগ করলেও তিক্ততা কমে না। শ্বসনতন্ত্রের রোগ, ক্রিমি, বিভিন্ন প্রকার চর্মরোগে বাসক উপকারী ভেষজ।  তথ্যসূত্র- গাছপালা তরুলতা  ছবি- নেট

তাম্রপুষ্পি বাসক

ছবি
ফুলের নাম- তাম্রপুষ্পি বাসক, রাম বাসক, বাঘাতিতা  বৈজ্ঞানিক নাম- Phlogacanthus thyrsiflorus  পরিবার- Acanthaceae  অন্যান্য নাম- সিংহাস্য, সিংহপুচ্ছ  বুনো ফুল। বাংলাদেশ, ভারত, চীন ও ভুটান এ এই ফুল প্রাকৃতিকভাবে বিস্তৃত। ঝোপ-ঝাড় বা নদীর পাড়ে এদের দেখা মিলবে। গাছ প্রায় ২.৪ মিটার লম্বা হয়। ফুল হলদে লাল বা তামাটে রঙের হয়। তামাটে রঙের ফুলের জন্য ফুলের নাম তাম্রপুষ্পি বাসক।  সাদা ফুলের বাসক যেমন তেতো তাম্রপুষ্পি বাসকও তেমন তেতো, সম্ভবত নাম তাই বাঘাতিতা। ফুলের গঠন সিংহের হা-করা মুখের হাসির মতো, তাই সিংহাস্য নাম। আবার তার পুষ্পদন্ড নাকি সিংহের লেজের মতো, তাই এর নাম সিংহপুচ্ছ। আর রামবাসক নামটি সম্ভবত এর গুণের জন্য।  আমাদের পরিচিত বাসক আর তাম্রপুষ্পি বাসক একই পরিবারের উদ্ভিদ। গবেষণায় দেখা গেছে, এই দুই বাসকের গুণ প্রায় সমান। ঠান্ডা-কাশি, অ্যাজমা, রক্তপিত্ত, হুপিং কাশি প্রভৃতিতে উপকারী। কিন্তু এর মাত্রা জেনে ব্যবহার করা উচিত। বেশি মাত্রায় ব্যবহারে তন্দ্রাভাব আসে, তবে কোনো ক্ষতি হয় না।  তথ্যসূত্র- গাছপালা তরুলতা  ছবি- নেট 

সুইট উইলিয়াম

ছবি
ফুলের নাম- সুইট সুলতান  বৈজ্ঞানিক নাম- Centaurea moschata (Synonym: Amberboa moschata, Centaurea imperialis)  পরিবার- Asteraceae  পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় প্রজাতি। গাছ ৯০ সেমি পর্যন্ত উঁচু। পাতার কিনার দন্তর। লম্বা ডাঁটার আগায় সুগন্ধি ফুল, নানা রঙের- সাদা, উজ্জ্বল লাল, বেগুনি-গোলাপী, বেগুনি ও হলুদ।  তথ্যসূত্র- ফুলগুলি যেন কথা  ছবি- নেট