মহুয়া
ফুলের নাম- মহুয়া, মধুক
বৈজ্ঞানিক নাম- Madhuca indica(মহুয়া), Madhuca longifolia(জল মহুয়া)
পরিবার- Sapotaceae
রবিকবির ভাষায়-
"চৈত্রদিনে তপ্ত বেলা তৃণ-আচঁল পেতে
শূণ্যতলে গন্ধভেলা ভাসায় বাতাসেতে-
কপোত ডাকে মধুকশাখে বিজন বেদনায়"
অথবা নজরুলের গানের চরনে- "দোল লাগে শাল পিয়াল বনে
নতুন খোপার ফুলে লো
মহুয়া বনে লুটিয়ে পরে
মাতাল চাঁদের হাসি লো।।"
মহুয়া অরণ্যবৃক্ষ। তবুও আমাদের এই ঢাকা শহরে কয়েকটি গাছ বেশ দাপট নিয়ে বেঁচেবর্তে আছে। বাংলা একাডেমীর দক্ষিণ-পূর্ব কোণে একটি তরুণ মহুয়া গাছ দাঁড়িয়ে আছে বড়সড় মানিপ্লান্টকে সঙ্গী করে। ছোট ছোট কয়েকটি ছাড়াও রমনা পার্কে বিশাল একটি মহুয়া গাছ আছে। এছাড়া জাতীয় উদ্যান, বলদা গার্ডেন ও কার্জন হলের বাগানেও আছে। পশ্চিমবাংলা থেকে আরও পশ্চিম দিকে গেলে মহুয়ার বন পাওয়া যাবে।
শহরে মহুয়ার কদর শুধু গন্ধের জন্য। কিন্তু সাঁওতালদের সাথে মহুয়ার সম্পর্ক বেশ নিবিড়। বসন্ত কালে মহুয়ার ফুল ফোটার সময় ফুলের লোভে বাদুর আর চামচিকার দল সারারাত আনন্দে মেতে থাকে। আর ঝরে পড়া ফুল সংগ্রহে মানুষের যতটা উৎসাহ উদ্দীপনা থাকে, ঠিক ততটাই ঝোক থাকে বনের পশুদের।
মহুয়ার ঝরে পড়া ফুল দেখে বেশ দ্বিধাদ্বন্দে পড়তে হয়, সেটা ফুল নাকি ফল তা নিয়ে। প্রায় ৩ সেমি লম্বা, সবুজাভ-হলুদ, রসালো- ফুলের ঝরে পড়া এই অংশ দেখে মনে হতেই পারে এটা মহুয়ার ফল। আসলে তা নয়, সেটা ঝরে পড়া ফুল যদিও তার সাথে পাপড়ি বা ফুলের অন্যান্য অংশ নাও থাকতে পারে। মহুয়া আমাদের নিজস্ব প্রজাতি।
বিশাল পত্রমোচী গাছ, ১৫-২০ মি উচু, মাথা ছড়ানো। পাতা ১০-২০ সেমি লম্বা। শীতে পাতা ঝরে, বসন্তে থোকা থোকা ঝুলন্ত ফুল, বোঁটা ৪-৫ সেমি লম্বা, পাপড়ি ৮-৯ টি, সাদা, রসালো, আশুপাতী। ফুলের মধ্য থেকে চোখা গর্ভমুন্ড বেরিয়ে থাকে। ফল ডিম্বাকার, শাঁসালো, ১-৩ সেমি লম্বা। বীজ ১-৪ টি। বীজের মাধ্যমে নতুন চারা গজায়।
তথ্যসূত্র- গাছপালা তরুলতা ও ফুলগুলি যেন কথা
ছবি- নেট
:) :) @}-;-'-;-'-;--------
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন